দ্রুত বর্ধনশীল, অল্প সময়ে বাজারজাত করার উপযোগী একটা প্রজাতী।
চাষ পদ্ধতিঃ
প্রথমে ভাল মানের ব্রুড থেকে কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক প্রজনন করিয়ে ট্যাংকে বা হাউজে নিয়ে কৃত্রিম খাবারে সাথে অভ্যস্ত করে নিতে হবে। শোল চাষে এটাই সবচেয়ে কঠিন ও জটিল একটা কাজ।
প্রথমে খাবার হিসেবে ভাল মানের হ্যাচারি বা নার্সিং পাউডার ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত পানি পরিবর্তন কিন্তু খুব জরুরী। কোন ভাবেই পানি নোংরা রাখা যাবে না এতে করে রোগ জীবানু ও ছত্রাক এর আক্রমণ কমানো যাবে ফলে পোনার মৃত্যুহার কমানো সম্ভব হবে।
এভাবে ২০-২৫ দিন নার্সিং করলে পোনা গড়ে ১.৫ ইঞ্চি হবে। খেয়াল রাখতে হবে এই সময় যেন পানির উচ্চতা ৬-৮ ইঞ্চির উপর না হয়। নিয়মিত পানি ও অক্সিজেন সরবরাহ রাখতে হবে। বেশি গভীরতা ও নোংরা পানিতে রাখলে পোনার মৃত্যহার অস্বাভাবিক রকম বেশি হবে। প্রজননের মৌসুমে এমনিতেই তাপমাত্রা বেশি তাই পানির গভীরতা অল্প থাকায় পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাবে, কোন ভাবেই পানির তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়তে দেওয়া যাবে না। এবং খুব প্রয়োজন হলে পানির উচ্চতা ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে। আর অবশ্যই হাউজ বা ট্যাংকের উপরে ছায়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে, পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় ট্যাংক বা হাউজ স্থাপন করতে হবে।
পোনার সাইজ ১.৫ -২ ইঞ্চি হলেই পোনার ঘনত্ব কমিয়ে আনতে হবে অথবা একই সময়ে পর্যায়ক্রমে আবারও ধীরে ধীরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি করে দিতে হবে যাতে পোনা তার প্রয়োজনীয় জায়গা পায় । একই সময়ে এই ধানী পোনাকে ভাল মানের প্রোটিন যুক্ত খাবার ৩৬% প্রয়োজনীয় পরিমান সরবরাহ করতে হবে দিনে দুই বা তিন ভাগে ভাগ করে।
এভাবে নার্সিং করলে পরবর্তী ১ মাসে পোনার সাইজ ৪-৫ ইঞ্চি হবে।
এই সাইজের চারা পোনা পুকুরে কালচারে দেওয়ার জন্য উপযোগী। প্রতি ৬-৭ ফুট পানির জন্য শতাংশে ৩০০ পিস চারা পোনা দেওয়া উত্তম (কালচারের সার্ভাইব রেট ৫০% হিসেব করে)।
কালচারারে চারা পোনাকে এসময় ৩৫% প্রোটিন যুক্ত খাবার দেহের ওজনের ৫% করে দিতে হবে। সময়ের সাথে প্রতি সপ্তাহে বা ১০ দিনে মাছের গড় ওজন পরীক্ষা করে খাবারের পরিমান বাড়াতে হবে।
শোল মাছ খুব অল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন একটা প্রজাতী। তাই নিয়মিত চুন লবন ও জীবাণুনাশক প্রয়োগ করা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। পানির প্যারামিটার নিয়মিত পরীক্ষা করে তা আবার ব্যালেন্স করে নিতে হবে।
এভাবে ৪ মাস কালচারের শোল মাছ ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত করা সম্ভব।
এই সাইজের মাছ বাজারজাত করার জন্য একদম উপযুক্ত।
সব কিছু ঠিকঠাক করতে পারলে শতাংশে ৭০-৮০ কেজি পর্যন্ত হারভেস্ট করা সম্ভব। যেহেতু শোল বাতাস থেকে অক্সিজেন নিতে পারে ও স্বল্প অক্সিজেনে বেচে থাকতে পারে তাই পানির গুনগত মান ঠিক রাখলে ও পানির উচ্চতা ৬-৭ ফুট রাখতে পারলে এই পরিমান প্রোডাকশন পাওয়া সম্ভব। বাস্তবে প্রোডাকশন ৪০ -৫০ কেজি / শতাংশই রাখাই উত্তম হবে।
উৎপাদন এফ সি আর ১ঃ২ কেজি।
বিশ্বাস করেন আর নাই করে শোল মাছ দ্রুত বর্ধনশীল একটা মাছ।
শীতকালের জন্য শোল চাষ না করাই উত্তম হবে।
অনেকটা নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা।
0 Comments
Please Do Not Enter Any Spam Link In Comment Box.
Emoji